আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ।
এ নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, সরকারের নির্দেশেই খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে যাচ্ছে না।
তাই প্রধান বিচারপতি যদি মনে করেন, বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খালেদা জিয়াকে আদালতে নিয়ে আসতে পারেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্বশরীরে দেখতে পারেন। স্বচক্ষে দেখে ন্যায়বিচার করতে পারেন। এ নিয়ে ইতোমধ্যে বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
আর দলটির নীতিনির্ধারকরাও মনে করেন, যেহেতু মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, তাই আদালত ইচ্ছা করলেই বিশেষ নির্দেশনায় আদালতে হাজির করে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য জামিন শুনানি করতে পারেন।
এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, আদালত সমস্ত এক্সপার্টেরও এক্সপার্ট। খালেদা জিয়াকে বিশেষ ব্যবস্থায় আদালতে এনে বিচারক দেখতে পারেন। তাহলে আমাদের রিপোর্টের বিষয়টা কতটুকু সত্য-অসত্য বুঝতে পারবেন।
খালেদা জিয়াকে আদালতে এনে বিচারক স্বচক্ষে দেখুক আমরা এটি আদালতকে বলেছি। অ্যাটর্নি জেনারেলের যদি রিপোর্ট আনতে দেরি হয় তাহলে তাকে স্বশরীরে আদালতে আনা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে আটক রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া ভালো মানুষ হেঁটে জেলখানায় গেছেন, এখন তিনি তিলে তিলে জেলখানায় ধুঁকেধুঁকে মরছেন চিকিৎসার অভাবে। বেগম খালেদা জিয়া জেলখানায় যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা তা তিনি পাচ্ছেন না।
তিনি যেখানে ভর্তি আছেন সেখানেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমাদের খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের সিনিয়র আইনজীবীরা দেখা করতে চেষ্টা করেছেন তারাও দেখা করতে পারেননি। শুধু তাই নয়, তার আত্মীয়-স্বজনকেও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
চিকিৎসকরাও বলেছেন, তিনি দিনদিন পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। হাত বাঁকা হয়ে যাচ্ছে, পা বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা তা এ দেশে দেয়া সম্ভব না। তার কিছু আলাদা মেডিসিন রয়েছে এগুলো এ দেশে পুশ করলে তার জীবনহানির ঝুঁকি রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, এটা সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। আদালত যদি মনে করেন তাহলে তারা খালেদা জিয়াকে স্বশরীরে উপস্থিত করে দেখতে পারেন। এখন সব চাইতে বড় বিষয় হলো খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে কথা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সত্য রিপোর্ট এলে খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা প্রয়োজন হবে না। আদালতে উপস্থিত করার বিষয়টি সাংঘর্ষিক হয়ে যায়।
তবে তিনি এও মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি হবে না। আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ খোলা নেই।